জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত ১৪ দলের

জাতীয় রাজনীতি সারা দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক:

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘‌১৪ দলের সভায় সর্বসম্মতিক্রমে জামায়াত-ছাত্রশিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’

সোমবার (২৯ জুলাই) সন্ধ্যায় গণভবনে ১৪ দলীয় জোটের জরুরি বৈঠক শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ১৪ দলীয় জোটের নেতৃবৃন্দ মনে করেন, বিএনপি, জামায়াত, ছাত্রদল, ছাত্রশিবির তাদের দোসর উগ্রবাদী জঙ্গি গোষ্ঠী বাংলাদেশের স্বাধীনতা- সার্বভৌমত্ব নস্যাৎ করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তারা সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে দেশকে অকার্যকর করার ষড়যন্ত্র করছে। অতিসম্প্রতি চোরা-গোপ্তা হামলা করে এবং গুলিবর্ষণ করে সরকারের ওপর দায় চাপাতে তারা দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ মানুষ হত্যা করে লাশ পর্যন্ত ঝুলিয়ে রেখেছে। এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠী যে প্রক্রিয়ায় হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে, তা ইতিহাসে নজিরবিহীন। জাতীয় স্বার্থে দেশবিরোধী এ অপশক্তিকে নির্মুল করা প্রয়োজন।

তিনি বলেন, ১৪ দল মনে করে, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা, তাদের শিক্ষাজীবনের সুরক্ষা দেওয়ার লক্ষ্যে সরকারকে পর্যায়ক্রমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। নেতৃবৃন্দ আশা করেন, কোনো শিক্ষার্থী ও নিরাপরাধ মানুষ যেন হয়রানির শিকার না হন। সেই বিষয়টিও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বিশেষ গুরুত্ব সহকারে দেখতে হবে।

সেতুমন্ত্রী বলেন, ১৪ দলীয় জোটের বৈঠকে দেশের সাম্প্রতিক সময়ে অনুষ্ঠিত সন্ত্রাস, নাশকতা, নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে দেশের জাতীয় নিরাপত্তা, জনগণের জান-মাল রক্ষার লক্ষ্যে আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে জনমনে স্বস্তি ফিরিয়ে আনার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানানো হয়।

দেশের জনগণের মধ্যে পরিপূর্ণ স্বস্তি আনার ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সামরিক বাহিনীর অগ্রণী ভূমিকার জন্য তাদের প্রতিও ১৪ দলের নেতৃবৃন্দ ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন বলে জানান ওবায়দুল কাদের।

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ-ইনু) সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেছেন, আমরা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছি, জামায়াত-শিবির সন্ত্রাসী গোষ্ঠী রাষ্ট্রের ওপর আক্রমণ এখনো বন্ধ করেনি। তাই মনে করি, বাংলাদেশের সাংবিধানিক ধারা, গণতান্ত্রিক ধারা, রাজনীতিকে রক্ষা করতে হলে বাংলাদেশের সন্ত্রাসী, জঙ্গি, স্বশস্ত্র গোষ্ঠীর রাজনীতি ধ্বংস করার লক্ষ্যে তা নিষিদ্ধ করা দরকার। আজকে ১৪ দলের সভা থেকে সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত হয়েছে, জামায়াত-শিবিরকে সংগঠনগতভাবে নিষিদ্ধ করা হোক। আমরা প্রস্তাব দিয়েছি, আশা করছি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সরকার নিয়ে প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।

বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, ১৪ দল মনে করে, আর সময়ক্ষেপণ না করে জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধ করতে হবে। এই দেশে সামনের দিকে যাতে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের উত্থান না ঘটতে পারে, সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে হবে। এজন্য আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি এবং সরকারকে অনুরোধ জানিয়েছি। আমরা আশা করি, প্রধানমন্ত্রী এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। নিশ্চই এক-দুই দিনের মধ্যেই এই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত পাব।

বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের সভাপতি দিলীপ বড়ুয়া বলেন, আজকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে একটি ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেই সিদ্ধান্ত জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধ করা। বিভিন্ন ঘটনা পরম্পরা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী যে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন, সেটা ঐতিহাসিক। জাতির বর্তমান যে ক্রান্তিকাল, সেই ক্রান্তিকাল থেকে উত্তরণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *