গাজীপুর প্রতিনিধি:
গাজীপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালেতের নতুন বিচারক হিসাবে নিয়োগ পেয়েছেন শামীমা আফরোজ।
বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের (বিচার শাখা-৩) উপসচিব (প্রশাসন-১) এ এফ এম গোলজার রহমান স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
তিনি এর আগে গাজীপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এ দায়িত্ব পালনকালে তিনি সততা, ন্যায়পরায়নতা, পেশাদারিত্ব দিয়ে আইনজীবি ও বিচারপ্রার্থীদের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন। তাঁর এ নিয়োগে গাজীপুরের আইনজীবি সমাজ ও বিচারপ্রার্থীসহ সবাই অত্যন্ত আনন্দিত। সকলেই তাঁকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।
একইসাথে গাজীপুরের জেলা ও দায়রা জজ আদালেতের বিচারক মমতাজ বেগমকে নারায়ণগঞ্জ শ্রম আদালতের বিচারক হিসেবে বদলি করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শক্রমে গাজীপুর জেলা ও দায়রা জজ মমতাজ বেগমকে নারায়ণগঞ্জ শ্রম আদালতের বিচারক হিসেবে বদলি করা হয়েছে। একই প্রজ্ঞাপনে গাজীপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক হিসেবে কর্মরত (জেলা ও দায়রা জজ) শামীমা আফরোজকে গাজীপুরের জেলা ও দায়রা জজ হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
গাজীপুরের আইনজীবি সূত্রে জানা গেছে, গাজীপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বিচারক হিসাবে নিয়োগ পাওয়ার পর শামীমা আফরোজ একাই তিনটি আদালতের বিচারক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এগুলো হল, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল, মানব পাচার অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও শিশু আদালত। বিচারক বেগম শামীমা আফরোজ এই তিনটি আদালতের দায়িত্ব নেয়ার সময় ৬৬৬২টি মামলা বিচারাধীন ছিল। এর মধ্যে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের মামলার সংখ্যা ৪ হাজার ৮৪৮টি, শিশু আদালতের মামলার সংখ্যা ১ হাজার ১৮১টি, মানব পাচার মামলা ৮৫টি এবং সিপি বা কোর্ট পিটিশন মামলার সংখ্যা ৫৪৮টি।
শামীমা আফরোজ গাজীপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক হিসেবে অত্যন্ত দক্ষতা ও সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি গাজীপুরে যোগদানের সময়ের বিশাল মামলা জট ছিল। তিনি অত্যন্ত দ্রুত গতিতে এবং দক্ষতার সাথে এই মামলার জট খুলতে সক্ষম হয়েছেন। তার সময়ে গাজীপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন তেমন ট্রাইব্যুনালের বিচারে গতিশীলতা ফিরে আসে। মিথ্যা ও সাজানো মামলার সংখ্যা কমে যায়। আইনজীবি ও বিচারপ্রার্থী উভয় পক্ষ দ্রুত ন্যায় পেয়েছেন। মামলা জটও অনেকটা কমে এসেছে।
শামীমা আফরোজ নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ী এলাকার কৃতি সন্তান। তাঁর পিতা রাশিয়ায় কুটনৈতিক মিশনে চাকরী করার কারণে তাঁর লেখাপড়া শুরু হয় রাশিয়ায়। তাঁর স্বামী অধ্যাপক মো: দেলোয়ায়ার হোসেন তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্কের অধ্যাপক। তাঁদের এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে।তিনি পেশাগত কারনে ও ব্যক্তিগত ভাবে রাশিয়া , নেদারল্যান্ডস, জাপান, মালয়শিয়া, থাইল্যান্ড ও ভারত ভ্রমণ করেছেন।
শামীমা আফরোজ এর আগে গাজীপুরে যুগ্ম জেলা জজ-১, নরসিংদীতে চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, মৌলভীবাজারের নারী ও শিশু আদালতের বিচারক হিসাবে সুনাম ও কৃতিত্বের সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন।