কালীগঞ্জে হত্যার তিন মাস পর আসামি গ্রেফতার

গাজীপুর সারা দেশ
গাজীপুর প্রতিনিধি:
গাজীপুরের কালীগঞ্জে স্ত্রীকে কটাক্ষের জেরে ফোন করে ডেকে নিয়ে রেক্সি বাবু রোজারিও (৪৩) নামের এক যুবককে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে মরদেহ ডোবায় মরদেহ ফেলে রাখে।
এ ঘটনার প্রধান আসামি লিংকন জন রোজারিওকে (৩৮) গ্রেফতার ও মরদেহ উদ্ধার করেছে গাজীপুর জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। মরদেহ গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য ও গ্রেফতার লিংকনকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
হত্যার শিকার রেক্সি বাবু রোজারিও কালীগঞ্জ উপজেলার তুমিলিয়া ইউনিয়নের দড়িপাড়া গ্রামের মুকুল রোজারিওর ছেলে। গ্রেফতার লিংকন জন রোজারিও একই গ্রামের মৃত লিও রোজারিওর ছেলে। ঘটনার পর সে নড়াইলের একটি মাছের ঘেরে নিজের নাম পরিচয় বদলে চাকরি নিয়েছিল।
শনিবার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গাজীপুর জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের পরিদর্শক (ওসি) জাহাঙ্গীর কবির।
ডিবি ওসি জাহাঙ্গীর কবির বলেন, হত্যা ঘটনাকে অপহরনের নাটক সাজিয়ে রেক্সির বাবার কাছে ৫০ লাখ টাকা দাবি করে লিংকন। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করে কালীগঞ্জ থানা পুলিশ ও র‌্যাব। পরে চাঞ্চল্যকর এই ঘটনার তদন্ত করে গাজীপুর ডিবি পুলিশ। ঘটনা সংঘটিত হওয়ার সাড়ে তিন মাস পর নড়াইল সদর উপজেলার তুলারামপুর গ্রামের জৈনক সুলতান উদ্দিনের মালিকানাধীন মাছের ঘেরে থেকে শুক্রবার ভোরে প্রধান আসামি লিংকনকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তার জবানবন্ধি অনুযায়ী একই দিন বিকেলে কালীগঞ্জ উপজেলার ঢাকা-ভৈরব রেল রুটের দড়িপাড়া এলাকার রেললাইনের উত্তর পাশের একটি ডোবা ডোবা থেকে রেক্সির বস্তাবন্দি গলিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
মরদেহ উদ্ধারের সময় ঘটনাস্থলে গাজীপুর জেলা ডিবি পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম, কালীগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামান, কালীগঞ্জ থানার ওসি আলাউদ্দিন, ইন্সপেক্টর (তদন্ত) রাজিউল্লাহ, জেলা ডিবি পুলিশের এসআই মিজানুর রহমান, শহিদুল ইসলামসহ অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
নিহতের বাবা মুকুল রোজারিও জানান, চলতি বছরের গত ১০ জুলাই দুপুরে আমার একমাত্র ছেলে রেক্সির মুঠোফোনে থেকে একটি ফোন আসে। পরে সে তার মাকে দড়িপাড়া বাজারে যাওয়ার কথা বলে বাড়ী থেকে বের হয়। ওইদিন রাতেও ছেলে বাড়ী ফিরে না আসায় সম্ভাব্য সকল স্থানে খোঁজাখুজি করে রাতেই কালীগঞ্জ থানায় নিখোঁজ সংক্রান্ত সাধারণ ডায়েরি (জিডি নং-৪৭৫) করেন। একপর্যায়ে ছেলের মোবাইল থেকে ফোন করে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা জানায় ছেলেকে জীবিত পেতে হলে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপন নিয়ে গাজীপুর শাল বনে আসেন। এরপর থেকে ছেলের মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। পরে তার ছেলের পূর্ব পরিচিত লিংকনে সাথে যোগাযোগ করে জানতে পারেন সে সহ তার সহযোগী কয়েকজন রেক্সিকে কৌশলে অপহরন করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে তার বাবার কাছে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপন দাবি করে। অপহরণের এক সপ্তাহ পর তিনি কালীগঞ্জ থানায় একটি মামলা (নং-২৪) দায়ের করেন। মামলায় তাঁর ছেলেকে অপহরণ ও খুন করার জখমের কথা উল্লেখ করেন।
কালীগঞ্জ থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রেক্সি কিছুটা মেয়েলী স্বভাবের ছিল। এ নিয়ে আসামী লিংকন একদিন রেক্সিকে হিজড়া কলে কটাক্ষ করে। পরে রেক্সি লিংকনের বউকে নিয়ে কটাক্ষ করে। আর এরই জেরে ক্ষিপ্ত হয়ে লিংকন রেক্সিকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে মরদেহ বস্তায় ভরে ডোবায় ফেলে রেখে অপহরনের নাটক সাজায়। ঘটনার পর থেকে লিংকন এলাকা থেকে পলাতক ছিল।
শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *