গাজীপুরে অটোরিকশা চুরির অপবাদে দুই শ্রমিককে নির্যাতন, ৪ দিন পর মামলা

গাজীপুর সারা দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক,গাজীপুর:

গাজীপুরের শ্রীপুরে নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়েছেন হোসেন (২৬) ও মাইনুদ্দীন সোহেল (২৬) নামে দুই শ্রমিক। তারা শ্রীপুর উপজেলার সাইটালিয়া গ্রামের ইরেক্টস্ পুলস অ্যান্ড স্টাকচারস্ লিমিটেডে কর্মরত।

অভিযোগ, তারা রাতভর ডিউটি শেষে ভোরে কারখানা থেকে বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে একই উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের আবদার গ্রামে অটোরিকশা চুরির অপবাদে ধরে এনে বাঁধা হয় গাছের সঙ্গে। চুরির অভিযোগ তুলে দিনভর রড, বাঁশ, রোল ও কাঠের খাপ দিয়ে ধাপে ধাপে পেটানো হয় তাদের। এরপর তাদের চোখে-মুখে ও সারা গায়ে লবণ ও মরিচের গুঁড়া ছিটিয়ে দেওয়া হয়।

পরে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের এই ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

গত মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) এই দুই শ্রমিককে নির্যাতনের ঘটনাটি ঘটলেও ঘটনার তিনদিন পর শুক্রবার (১ নভেম্বর) নির্যাতনের শিকার এক শ্রমিক বাদী হয়ে মামলা করেন।

শনিবার (২ নভেম্বর) বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেন শ্রীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জয়নাল আবেদীন মণ্ডল।

নির্যাতনের শিকার আলমগীর উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের আবদার গ্রামের আছিম উদ্দিনের ছেলে। সোহেল ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার ভাতাদিয়া গ্রামের জয়নাল আবেদীনের ছেলে।

ওসি জানান, মামলায় ৬ জনকে এজাহারনামীয় আসামি করা হয়েছে। অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন ৩ পুরুষ ও ৩ জন নারী। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্তরা পলাতক রয়েছেন। তাদেরকে গ্রেপ্তারে থানা পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

মামলার বাদী এজাহারে উল্লেখ করেন, মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) নাইট ডিউটি শেষে সকাল ৬টায় কারখানা থেকে বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ফাইজুদ্দিনসহ অন্য আসামিরা জোর করে তাদের একটি অটোরিকশায় উঠান। পরে তারা স্থানীয় কাশেমপুর বাজার সংলগ্ন গজারি বনের ভেতর নিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে লোহার রড ও লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি মারতে থাকেন। একপর্যায়ে তারা অটোরিকশা চুরির কথা স্বীকার করতে বলেন। তা না করায় শ্রমিকদের অবদার বাজার এলাকায় ফাইজুদ্দিনের বাড়ির সামনে এনে গাছের সঙ্গে বেঁধে আবারও নির্যাতন করে এবং ক্ষতস্থানে লবণ-মরিচের গুঁড়া ছিটিয়ে দেয়। এরপর আসামিরা শ্রমিক আলমগীর হোসেনের কাছ থেকে একটি বাইসাইকেল এবং মাইনুদ্দিন সোহেলের বড় ভাইয়ের কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা নিয়ে ছেড়ে দেয়।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *