গাজীপুরে পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পর্শে আইইউটি’র ৩ শিক্ষার্থী নিহত

গাজীপুর সারা দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক,গাজীপুর:

গাজীপুরের শ্রীপুরে পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পর্শে তিন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে।

গাজীপুরের শ্রীপুরের তেলিহাটি ইউনিয়নের উদয়খালী গ্রামে শনিবার (২৩ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে একটি পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পর্শে ইসলামিক ইউনিভাসিটি অব টেকনোলজি (আইইউটি) এর ৩ শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন।

মারা যাওয়া শিক্ষার্থীরা হলেন- মোজাম্মেল হোসেন নাঈম (২৪), মোস্তাকিম রহমান মাহিন (২২) ও জোবায়ের আলম সাকিব (২২)। তারা সবাই আইইউটি- এর মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। তাদের বিস্তারিত পরিচয় জানা যায়নি।

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক জাকিউল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, মৃত অবস্থায় তিন জনকে হাসপাতালে আনা হয়। আহতদের সংখ্যা আমরা এখনও জানতে পারিনি।

জানা গেছে, আজ শনিবার সকালে গাজীপুর মহানগরীর বোর্ড বাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভাসিটি অব টেকনোলজি (আইইউটি) এর মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের প্রায় ৪৬০ জন শিক্ষার্থী বিআরটিসির ডাবল ডেকার বাসে করে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের উত্তর পেলাইদ গ্রামের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে যান। বাসগুলোর মধ্যে বিআরটিসি’র ডাবল ডেকারের ৬টি ও ৩টি মাইক্রোবাস রয়েছে। তারা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো নিয়ে শ্রীপুরের গ্রামীণ আঞ্চলিক সড়ক ধরে রিসোর্টের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন।

উত্তর পেলাইদ গ্রামে যাওয়ার পথে বাসগুলো গ্রামীণ সড়কের উদয়খালী বাজারে পৌঁছালে বহরের বিআরটিসির ডাবল ডেকার একটি বাসের উচ্চতা বেশি হওয়ায় উপরে থাকা পল্লী বিদ্যুতের তারের সাথে বাসটির স্পর্শ হয়। এতে বাসে থাকা ৬০/৭০ যাত্রীর মধ্যে কয়েকজন বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে আহত হন। পরে দ্রুত তাদের উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।

স্থানীয় বাসিন্দা আফসার উদ্দিন (৭০) জানান, গাজীপুরের বোর্ড বাজার এলাকার আইইউটির তৃতীয় বর্ষের সাড়ে ৪৬০ জন শিক্ষার্থী ওই এলাকার মাটির মায়া রিসোর্টে ৬টি বিআরটিসি দোতলা বাস এবং তিনটি মাইক্রোবাস নিয়ে পিকনিকে আসেন। তেলিহাটি ইউনিয়নের উদয়খালী গ্রামে পৌঁছানোর পর সড়কের পাশ দিয়ে যাওয়া ১১ হাজার ভেল্টেজের লাইনের সঙ্গে শেষের বাসটি বিদ্যুতায়িত হয়। এ সময় ২ ছাত্র বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলে মারা যান। আহতদের প্রতেকেরই শরীরের বিভিন্ন অংশ বিদ্যুতায়িত হয়ে কারো হাত, কারো পা, কারো মুখ ঝলসে গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শী শামীম আহমেদ, রুবলে মিয়া ও জাকির হোসন জানান, ৫টি বাস রিসোর্টে চলে যায়। সব শেষের বাসটি সড়কের পাশের ১১ হাজার ভেল্টেজের লাইনে স্পর্শ হলে পুরো বাসই বিদ্যুতায়িত হয়। এ সময় বাস থেকে ধোঁয়া বের হতে থাকলে ছাত্ররা চিৎকার শুরু করেন। আমরা তাদের চিৎকার শুনে বাসের কাছে যাই। বিদ্যুৎ অফিসে ফোন দিয়ে বিদ্যুৎ লাইনের সংযোগ বন্ধ করতে বললে তারা বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেন। তা না হলে ভেতরে আরও ছাত্র মারা যেতেন।

ময়মনসিংহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর উপ-মহা ব্যবস্থাপক (ডিজিএম) খন্দকার মাহমুদুল হাসান জানান, ওই লাইটি ১১ হাজার ভেল্টেজের ছিল। সড়কের উপর দিয়ে বিদ্যুতের লাইন ক্রস করা অবস্থায় রয়েছে। একটি বাসকে সাইড দিতে গিয়ে দোতলা বাসটি একটু হেলে পড়ায় বিদ্যুতায়িত হয়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *