শেখ হাসিনার ‘৪০০ কোটির পিয়নের’ অ্যাকাউন্টে জমা হয় ৬২৬ কোটি টাকা

আইন-অপরাধ

নিজস্ব প্রতিবেদক:

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আলোচিত ‘৪০০ কোটি টাকার পিয়ন’ মো. জাহাঙ্গীর আলম ও তার স্ত্রীর কামরুন নাহারের নামে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদক এ মামলা করে।

মো. জাহাঙ্গীর আলমের ৮টি ব্যাংকের ২৩ হিসাবে সর্বমোট ৬২৬ কোটি ৬৫ লাখ ১৮ হাজার ১০৭ টাকা জমা এবং ৬২৪ কোটি ৬০ লাখ ১৫ হাজার ৬৭১ টাকা উত্তোলিত হয়েছে বলে দুদকের এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।

দুদকের মহাপরিচালক আক্তার হোসেন সাংবাদিকদের এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) দুদকের ঢাকার সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে এ মামলা করা হয়।মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, আসামি জাহাঙ্গীর আলম স্থাবর ও অস্থাবর মিলিয়ে ১৮ কোটি ২৯ লাখ ১০ হাজার ৮৮২ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেন। জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করায় এবং তিনি ও তার মালিকানাধীন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে অবৈধ উপায়ে অর্জিত অর্থ ভোগ করার মানসে আটটি ব্যাংকের ২৩টি হিসাবে সর্বমোট ৬২৬ কোটি ৬৫ লাখ ১৮ হাজার ১০৭ টাকা জমা/ক্রেডিট ও জমাকৃত ওই অর্থ বিভিন্ন মাধ্যমে উত্তোলন বা স্থানান্তর করে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেন।

অনুসন্ধানকালে আরও দেখা যায়, মো. জাহাঙ্গীর আলম উপরোক্ত অবৈধ সম্পদ অর্জনের মাধ্যমে তার নিজ নামীয় ও তায় বিভিন্ন ব্যাবসায়িক প্রতিষ্ঠানের নামে বিভিন্ন ব্যাংকে হিসাব খুলেছেন।

তার আটটি ব্যাংকের ২৩ ও হিসাবে সর্বমোট ৬২৬ কোটি ৬৫ লাখ ১৮ হাজার ১০৭ টাকা জমা এবং ৬২৪ কোটি ৬০ লাখ ১৫ হাজার ৬৭১ টাকা উত্তোলিত হয়েছে। যা দুদকের অনুসন্ধানে সম্পূর্ণ অস্বাভাবিক ও সন্দেহজনক মর্মে প্রতীয়মান হয়েছে।অবৈধভাবে অর্জিত অর্থ ভিন্ন ভিন্ন ব্যক্তিদের মাধ্যমে বিভিন্নভাবে তার হিসাবে জমা হওয়ার পর তিনি তা বিভিন্ন পন্থায় স্থানান্তর করেছেন। যার মধ্যে মো. জাহাঙ্গীর আলম তার মালিকানাধীন স্কাই রি অ্যারেঞ্জ নামে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের একটি চলতি হিসাবে শুধু ২০২৪ সালের (প্রথম ৫ মাসে) ৮৩ দিনে মোট ১৭৮ কোটি টাকা জমা এবং ১৭৮ কোটি ৯৩ টাকা উত্তোলন/ফান্ড ট্রান্সফার করেন।

শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেছিলেন, ‘আমার বাসার একজন পিয়ন ছিল, সেও নাকি ৪০০ কোটি টাকার মালিক! হেলিকপ্টার ছাড়া নাকি চলে না। পরে তাকে ধরা হয়েছে। খোঁজখবর নেওয়া হয়েছে।’ এরপর আলোচনায় আসেন জাহাঙ্গীর আলম।

অন্য একটি মামলায় আসামি করা হয় মো. জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী কামরুন নাহারকে।

তার বিরুদ্ধে করা মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ৬ কোটি ৮০ লাখ ৪৮ হাজার ৬৪২ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও সম্পদ ভোগ দখলে রাখার অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৭(১) ধারা তৎসহ দণ্ডবিধিরর ১০৯ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *