কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় ঔষধ ব্যবসায়ী নিহত, আটক ২

আইন-অপরাধ গাজীপুর সারা দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক,গাজীপুর:

গাজীপুরের শ্রীপুরে কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় হাসিবুল ইসলাম নামে এক ওষুধ ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয়েছে।

বৃহস্পতিবার ভোররাত তিনটার দিকে পৌরসভার কেওয়া পশ্চিম খন্ড (মসজিদ মোড়) এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। পরে অভিযান চালিয়ে, কিশোর গ্যাংয়ের ২ সদস্যকে আটক করে পুলিশ।

নিহত হাসিবুল ইসলাম (৪০) বরিশাল জেলার বানারিপাড়া উপজেলার ইলোহার গ্ৰামের আব্দুল হাইয়ের ছেলে। দীর্ঘদিন ধরে তিনি শ্রীপুরের কেওয়া পশ্চিম খন্ড মসজিদ মোড় এলাকায় শ্বশুরবাড়িতে থাকতেন। সেখানে শ্বশুরের বাড়ির পাশে একটি ওষুধের দোকান ছিল তার।

ঘটনার বর্ণনায় তার স্বজনরা বলেন, হাসিবুল ইসলাম, তাঁর স্ত্রী, সন্তান ও আরেক স্বজন একটি প্রাইভেট কারে করে ঢাকা থেকে বাড়িতে ফিরেছিলেন। গাড়িটি বৃহস্পতিবার ভোররাত আড়াইটায় কেওয়া পশ্চিম খন্ড মসজিদ মোড় এলাকার বাড়ির সামনে থামে। গাড়ি থেকে নেমে তার স্ত্রী বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। অপরদিকে হাসিবুল ইসলাম ঘরের চাবি আনতে বাড়ির ২০০ গজের মধ্যে অবস্থিত তার দোকানে যান। এ সময় হঠাৎ ৮ থেকে ১০ জনের একটি কিশোর গ্যাং সেখানে এসে জোর করে হাসিবুলের স্ত্রীর শরীর থেকে স্বর্ণালংকার খুলে নেয়। বাধা দিলে সেখানে উপস্থিত অপর স্বজনকে আঘাত করে তারা। এ সময় ফার্মেসী থেকে ফিরে এসে হাসিবুল কিশোর গ্যাং এর সদস্যদের বাধা দেন। পরে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা ইট দিয়ে হাসিবুলের শরীরে আঘাত করেন। মারাত্মক জখম হয়ে হাসিবুল মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তাকে একই গাড়িতে করে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

বিষয়টি থানায় জানালে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ২ জনকে আটক করে। আটককৃতদের মধ্যে মো. অন্তর(২০) ও মো. রোমান(২১) নামে দুজন আছেন। তাদের দুজনের বাড়ি ঘটনাস্থল কেওয়া পশ্চিম খন্ড এলাকায়।

হাসিবুল ইসলাম বাদশার প্রাইভেটকারচালক শিমুল মিয়া বলেন,’গাড়ি দাঁড় করানোর পরপরই ওরা অস্বাভাবিক আচরণ করতে থাকে। গাড়ির সামনে এসে নারীদের দেখে উল্লাস শুরু করে। এরপর নারীদের গায়ে হাত দেয়। গাড়ি থেকে নামার পর আমাকে মারধর করে। ওরা সংখ্যায় অনেক, তাই তাদের সঙ্গে পারা সহজ ছিল না। তা ছাড়া সবাই মাদকাসক্ত ছিল। গেট ভেঙে শেষ পর্যন্ত তাঁকে হত্যা করে। ওরা আমার দিকেও তেড়ে এসছিল। আমরাও আহত হয়েছি।’

নিহত ওষুধ ব্যবসায়ীর স্ত্রী মোছা. মাহমুদা আক্তার বলেন, ‘ আমার স্বামী বারবার নিজের পরিচয় দিয়ে রুবেলকে ভাগনে বলে অনেকবার চলে যাওয়ার অনুরোধ করেন। ওদের শরীরে হাত বুলিয়ে দেন, তবু ওরা থামেনি। তাদের নির্যাতনের কারণে আমার স্বামী প্রস্রাব করে দেয়। মাদকাসক্তরা কতটা হিংস্র, আমার বাসার গেট ভেঙে ভেতরে ঢুকে তারা আমার স্বামীকে খুন করেছে। তারা আমার বোনসহ আমাকেও লাঞ্ছিত করেছে। আমি ওদের ফাঁসি চাই ।’

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন মণ্ডল বলেন, ‘খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গেই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুরের শহিদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত দুজনকে আটক করা হয়েছে। পলাতক রুবেলসহ অন্যদের আটক করতে অভিযান চলছে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *